স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস উপলক্ষ্যে আজ দিনভর নিখরচায় স্তন ক্যানসার সম্পর্কিত পরামর্শ দিল মেডেল্লা কার্কিনোস ওঙ্কোলজি ইনস্টিটিউট
কলকাতা (৩১ অক্টোবর '২৫):- 'স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস' (Breast Cancer Awareness Month 2025) উপলক্ষ্যে আজ দিনভর নিখরচায় স্তন ক্যানসার সম্পর্কিত পরামর্শ দিল বারাকপুর মহকুমার 'মেডেল্লা কার্কিনোস ওঙ্কোলজি ইনস্টিটিউট' (Medella Karkinos Oncology Institute)।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, "মহিলাদের 'ম্যামোগ্রাম' করতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে 'আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি' এবং 'ফার্মাসিউটিক্যাল ডিভিশন অব ইম্পিরিয়াল কেমিক্যাল ইণ্ডাস্ট্রীজ'-এর যৌথ উদ্যোগে ১৯৮৫ সাল থেকে অক্টোবর মাসকে 'স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস' রূপে চিহ্নিত করা হয়েছে।
'মেডেল্লা কার্কিনোস ওঙ্কোলজি ইনস্টিটিউট'-এর চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের সম্মিলিত প্রয়াসে আজ বিভিন্ন বয়সের অর্ধ শতাধিক মহিলাকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করে বোঝার চেষ্টা হয় যে আদপেও তাঁদের ক্যানসার হয়েছে কিনা।
সকলের অবগতির জন্য বলে রাখা যেতেই পারে সমগ্র উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যে 'মেডেল্লা কার্কিনোস ওঙ্কোলজি ইনস্টিটিউট' হচ্ছে এমন এক ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র যেখানে 'স্বাস্থ্য সাথী কার্ড' (Swastha Sathi Card)-এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিখরচায় চিকিৎসা মেলে।
আজ মহিলাদের চিকিৎসা তথা সচেতনতা শিবির পরিচালনার শেষে নিজের কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে সংস্থার পূর্বাঞ্চলের নির্দেশক তথা চিকিৎসক জাভেদ আখতার (Dr. Javed Akhtar, Director East, Medella karkinos Oncology Institute) জানান, "একথাটা সবসময় আমাদের মাথায় রাখতে হবে ইতিমধ্যে 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা' (World Health Organization) সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন ক্যানসার রোগের শিকার হবেন। তাই আমাদের প্রত্যেককে এখন অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।"
ডাঃ জাভেদ আখতার আরো বলেন, "যদি কোনো মহিলা তাঁদের স্তনের ভেতর মটর দানার মতো কোনো কিছুর অস্তিত্ব টের পান, যদি তাঁদের স্তনের চামড়ায় কোনোরকম রুক্ষ্মতা বা খড়খড়ে ভাব অনুভূত হয়, যদি স্তনের বোঁটা দিয়ে জলীয় দ্রবণ বেরনোর প্রবণত চোখে পড়ে কিংবা স্তনের কোনো অংশ শরীরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে মনে হয়, সেক্ষেত্রে নিজের ও পরিবারের সার্বিক মঙ্গলের জন্য কালবিলম্ব না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা একান্ত আবশ্যক।"
সচেতনতা শিবিরে অংশগ্রহণ করে চিকিৎসা কেন্দ্রের অন্যতম চিকিৎসক সায়নী ভঞ্জ (Dr.Sayani Bhanja, Consultant Medical Oncologist) বলেছেন, "মানুষের সচেতনতার অভাবের কারণে বেশিরভাগ রোগী রোগের তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, এর ফলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠাটা একদিকে যেমন সময় সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায় তেমনই হয়ে ওঠে ব্যায় বহুল।"
কথা প্রসঙ্গে সংস্থার রেডিয়েশন চিকিৎসক রাজর্ষি গোস্বামী (Dr. Rajarsi Goswami, Consultant Radiation Oncologist) আক্ষেপ করে বলেন, "অনেক সময় পারিবারিক ও সামাজিক লজ্জা ও আতঙ্কের কারণে আজও অনেক শহুরে শিক্ষিত মহিলারাও সব জেনেও রোগটা সম্পর্কে কাউকে কিছু জানান না, আর এখান থেকেই শুরু হয় সমস্যা, সুস্থতার প্রয়োজনে লজ্জাকে কাটাতে হবে।"
অন্যদিকে সংস্থার অপর রেডিয়েশন চিকিৎসক পলাশ দে (Dr. Palash Dey, Consultant Radiation Oncologist) বলেছেন, "ধূমপান, মদ্যপান, কর্মবিমুখতা, অবিবাহিত থাকা বা শিশুকে স্তন্যপানে অনীহা তথা পাশ্চাত্যের ধাঁচে মহিলাদের জীবনধারণের প্রবণতা এই রোগ বৃদ্ধির একটা অন্যতম কারণও বটে।"
যদিও সংস্থার শল্য চিকিৎসা বিভাগের বরিষ্ঠ চিকিৎসক চিরঞ্জিত মুখার্জি (Dr. Chiranjit Mukherjee, Surgical Oncologist) তাঁর বক্তব্যে জানান, "অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই, সব সময় মাথায় রাখবেন, প্রথম বা দ্বিতীয় ধাপে রোগ সনাক্ত হলে বেশিরভাগ সময়ই স্তন বাদ দিতে হয় না, ওষুধ ও নানাবিধ উন্নতমানের চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন, তবে তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে এলে রোগী ও চিকিৎসক উভয়কেই বিভিন্ন অনভিপ্রেত ও অনাকাঙিক্ষত পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।"



Comments
Post a Comment