বন্ধন এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের রোষানলে পুড়তে পারে বন্ধন ব্যাঙ্কের ভবিষ্যত


হীরক মুখোপাধ্যায়

কোলকাতা (২৮ সেপ্টেম্বর '২৪):- 'বন্ধন এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট' (Bandhan Employees Welfare Trust) সংক্ষেপে 'বিইডাব্লুটি' (BEWT)-র সদস্য ও সদস্যাদের অভিযোগের তীরে আজ পরোক্ষভাবে কালিমালিপ্ত হল 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড' (Bandhan Bank Limited)।

'বিইডাব্লুটি'-র তরফ থেকে কোলকাতার 'মহাবোধি সোসাইটি হল'-এ আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার সদস্য ও সদস্যারা দাবী জানিয়ে বলেছেন, "তাঁদের কাছ থেকে 'বন্ধন কোন্নগর' শেয়ার বাবদ যে টাকা তুলেছিল তা বর্তমানে খাটছে 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড'-এ অথচ শেয়ার হোল্ডার রূপে তাঁরা কোনো লভ্যাংশ বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না।"

যদিও এহেন গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড'-এর তরফ থেকে এখনো কোনো স্পষ্টীকরণ পাওয়া যায় নি।

'বিইডাব্লুটি'-র অন্যতম সদস্য তথা শেয়ার গ্রাহক সুব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, "শেয়ার-এর লভ্যাংশ এবং মূল আমানত ফিরে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনে আদালতে যেতেও পিছুপা হবেন না সংগঠনের প্রতারিত কর্মীকুল।"

'বিইডাব্লুটি'-র সদস্য ও সদস্যাদের দাবী অনুযায়ী, "২০০৭-০৮ সাল নাগাদ 'বন্ধন কোন্নগর' ও 'বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড' তাঁদের কর্মীদের জানান, অর্থের বিনিময়ে কর্মীরা শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার গ্রহীতারা ১০ বছর পর থেকে আজীবন লভ্যাংশ পেতে থাকবেন।
দুই সংস্থার ঘোষণার পর 'বন্ধন কোন্নগর'-এর নামে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারের উপর শেয়ার প্রদানের বয়ান ছাপানো হয়েছিল।
শেয়ার গ্রহীতাদের থেকে আদায়ীকৃত অর্থ 'বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড', 'বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড', 'বন্ধন ফিনান্সিয়াল হোল্ডিং লিমিটেড'-এর হাত ঘুরে বর্তমানে 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড'-এর ইক্যুইটি শেয়ারে পরিবর্তিত হয়েছে।"


'বিইডাব্লুটি'-র তরফে শুক্লা বল সহ অন্যান্য সদস্য ও সদস্যাবৃন্দ একযোগে জানিয়েছেন, "২০০৭-০৮ সালে আমাদের ৩০৭৬ জন সদস্য ও সদস্যা 'বন্ধন কোন্নগর'-এর তরফে জারী করা বিভিন্ন অঙ্কের শেয়ার কিনেছেন। কিন্তু ১০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা উচিত লভ্যাংশ পাননি বরং অধিকাংশ আমানতকারীই প্রতারিত হয়েছেন।"

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড'-এর নিজস্ব সংস্থা রূপে যাবতীয় সমাজসেবা মূলক কাজ করতে দেখা গেছে 'বন্ধন কোন্নগর'-কে।


সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে 'বিইডাব্লুটি'-র তরফে চন্দ্রশেখর ঘোষ প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারের প্রতিলিপি দেখিয়ে জানানো হয়েছে "২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল এক সাক্ষাৎকারে 'বন্ধন ব্যাঙ্ক লিমিটেড'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন ব্যাবস্থাপক পরিচালক ও মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক চন্দ্রশেখর ঘোষ (Chandrasekhar Ghosh, Founder, Former Managing Director & Chief Executive Officer, Bandhan Bank Limited) জানিয়েছিলেন, 'বন্ধন ব্যাঙ্কের ৩ হাজার কর্মী মিলিয়নিয়ার হয়েছেন।'
কিন্তু বাস্তবে কেউই সেভাবে টাকা পাননি, যে কয়েকজন কর্মী সামান্য টাকা পেয়েছেন তাঁদেরও বলে দেওয়া হয়েছে আপনারা ভবিষ্যতে আর কোনো টাকা পাবেন না।"

Comments