কলকাতা (২৬ সেপ্টেম্বর '২৫):- উৎসবের প্রাক মুহূর্তে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে চিকিৎসক সমাজের আবেদন, "পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয়, অনাকাঙিক্ষত ও অবাঞ্ছিত শব্দতাণ্ডব পরিহার করে উৎসবে মাতুন, অন্যথায় আপনার বা সমাজের সামান্য ভুলের কারণে আপনার এবং সমাজের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যেতে পারে," আগামী ২২ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্তরে বধির ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক সপ্তাহ (International Week of the Deaf People) পালনের প্রাক্কালে গতকাল 'প্রেস ক্লাব কোলকাতা'-য় জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংগঠনিক ভাবে এই বার্তা দিলেন 'অ্যাসোসিয়েশন অব অটোল্যারিঙ্গোলজিস্টস অব ইণ্ডিয়া' (Association of Otolaryngologist of India) সংক্ষেপে 'এওআই' (AOI)-এর রাজ্য শাখার সদস্য চিকিৎসকবৃন্দ।
'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা' (World Health Organization) প্রদত্ত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে সূচিত করতে গিয়ে 'অ্যাসোসিয়েশন অব অটোল্যারিঙ্গোলজিস্টস অব ইণ্ডিয়া'-র সর্বভারতীয় অধ্যক্ষ চিকিৎসক দ্বৈপায়ণ মুখোপাধ্যায় (Dr. Dwaipayan Mukhopadhyay, National President, AOI) জানিয়েছেন, "এই মুহূর্তে বিশ্বের ১৫০ কোটি (১.৫ বিলিয়ন) লোক শ্রবণশক্তির ঘাটতি জনিত অসুস্থতা নিয়ে ভুগছেন, ২৫ বছর বাদে এই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে ২৫০ কোটিতে (২.৫ বিলিয়ন)।
ভাবতে অবাক লাগে এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৩ কোটি ৪০ লাখ (৩৪ মিলিয়ন) শিশুর শ্রবণশক্তি একেবারেই নেই বললেই চলে, অথচ জনগণ যদি সচেতন হত, তাহলে এদের ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ২ কোটি ৪ লাখ (২৪ মিলিয়ন) শিশুর শ্রবণশক্তি হয়তো নষ্ট হত না।"
'এওআই'-এর রাজ্য শাখার অধ্যক্ষ চিকিৎসক উৎপল জানা, সচিব অজয়কুমার খাওয়াস সহ অন্যান্য চিকিৎসকদের পাশে বসে সংগঠনের জাতীয় অধ্যক্ষ আরো বলেছেন, "শহরের মধ্যে যেখানে ৪৫ থেকে ৫৫ ডেসিবেল শব্দ সহনশীল বলে মান্যতা দেওয়া হয়েছে সেখানে সামান্য শব্দবাজির কারণে যে আওয়াজ হয় তা অনেকক্ষেত্রেই ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবেলের সীমা ছুঁয়ে ফেলে, তবে শব্দবাজির প্রদর্শনী বা অন্য ক্ষেত্রে যে শব্দ উৎপন্ন হয় তা সবসময়ই ১২০ থেকে ১৪০ ডেসিবেলের উপরে থাকে, এর সঙ্গে আছে ডিজের শব্দ যা সবসময় ১১০ থেকে ১২০ ডেসিবেলের মধ্যে ঘোরাঘুরি করে। কানের পর্দার উপর বা অন্যত্র আচমকা বা একনাগাড়ে সহনশীল মাত্রার উপরে শব্দতাণ্ডব চলতে থাকলে শ্রবণশক্তি নষ্ট তো হবেই।
তবে এর সাথে যুবসমাজের কাছে নীরব ঘাতক হয়ে উঠেছে মোবাইল বা কম্পিউটারের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ধরনের হেড ফোন।
নিজেদের ও সমাজের এবং ভাবী প্রজন্মের হিতার্থে অবিলম্বে শব্দতাণ্ডব পরিহার করা উচিত, নতুবা সেই দিন দূরে নেই যেদিন ঘরে ঘরে বধিরদের দেখা যাবে।"

Comments
Post a Comment