শরীর থেকে পুরোপুরিভাবে বিচ্ছিন্ন হাত জোড়া লাগিয়ে তাক লাগালো হাওড়ার নারায়ণা সুপারস্পেশিয়ালিটি হসপিটাল


হীরক মুখোপাধ্যায়

কোলকাতা (১৩ ডিসেম্বর '২৪):- অতি ধীর গতিতে হলেও বেসরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবার সহায়তা নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অগ্রগতির সোপান তৈরী করছে পশ্চিমবঙ্গ।

স্বাস্থ্য বিভাগের জাতীয় তথ্য অনুযায়ী 'অমৃতা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স'-এর চিকিৎসক ডাঃ সুব্রামনিয়ম আইয়ার-এর নেতৃত্বে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দেশের প্রথম 'বাইল্যাটারাল ক্যাডাভেরিক হ্যাণ্ড ট্রান্সপ্ল্যান্ট' (Bilateral Cadaveric Hand Transplant) নামাঙ্কিত শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে এক মৃৎকল্প (Brain-death) মহিলার শরীর থেকে তাঁর দুটো হাত বিচ্ছিন্ন করে এক পুরুষ রোগীর হাতে জোড়া লাগানো হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গের দুর্ভাগ্য চিকিৎসা জগতের অগ্রগতির এই বিশাল ঢেউ কোলকাতায় এসে পৌঁছতে অনেক বছরই সময় লেগে গেল।

আজ কোলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে 'নারায়ণা হেল্থ' (Narayana Health)-এর তরফ থেকে জানানো হয়, "এই বছরের ৩১ আগস্ট হাওড়া উদয়নারায়ণপুর নিবাসী এক শ্রমিকের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন বাম হাত প্রতিস্থাপন (Arm Replantation Surgery) করে 'নারায়ণা সুপারস্পেশিয়ালিটি হসপিটাল হাওড়া' (Narayana Superspeciality Hospital Howrah)-র পরামর্শদাতা প্লাস্টিক ও মাইক্রোভাসকুলার শল্যচিকিৎসক ডাঃ আদিত্য কানুই (Dr. Aditya Kanui, Consultant & Plastic & Microvascular Surgeon) নিঃসন্দেহে হাসপাতাল সহ পশ্চিমবঙ্গকে গৌরবান্নিত করেছেন।
ডাঃ কানুই-এর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এক দল টানা ৮ ঘণ্টার দীর্ঘ ও জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হাত পুনঃস্থাপনের কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন।"

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে এক সন্তানের পিতা তথা মোল্ডিং মেশিন চালক অর্পণ সামন্ত (৩৭) বলেছেন, "৩১ অগস্ট কারখানার অভ্যন্তরে দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই সহকর্মী ও অন্যান্য কিছু ব্যক্তি গ্রিস-কালী লাগা আমার রক্তাক্ত বিচ্ছিন্ন হাত সহ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।"

ডাঃ আদিত্য কানুই আরো জানিয়েছেন, "বিভৎস দুর্ঘটনার শিকার অর্পণ সামন্তকে যখন আমরা হাতে পাই তখন প্রথমেই তাঁর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হাত ও শরীরে লেগে থাকা হাত পরীক্ষা করে দেখা যায়, এই হাত পুনরায় জোড়া লাগানো সম্ভব। তারপর হাসপাতালের আন্তঃবিভাগের বরিষ্ঠ চিকিৎসকদের সহায়তা নিয়ে অর্পণ সামন্ত-র হাত পুনরায় প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
এখনো শ্রী সামন্ত আমাদের চিকিৎসাধীন রয়েছেন, আমরা আশাবাদী কিছুটা দেরী হলেও তিনি পুনরায় তাঁর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।"

Comments