হীরক মুখোপাধ্যায়
কোলকাতা (২২ নভেম্বর '২৪):- : বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে আজ অনেক প্রবীণ ব্যক্তিই অসুস্থতা জনিত জীবন্মৃত অবস্থা থেকে 'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন' (Deep Brain Stimulation) নামাঙ্কিত শল্যচিকিৎসা (Surgery)-র সুযোগ নিয়ে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন," বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন গুরুগ্রাম মেদান্তা-র ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স-এর স্নায়ু শল্যচিকিৎসা বিভাগের নির্দেশক চিকিৎসক অনির্বাণদীপ ব্যানার্জি [Dr. Anirbandeep Banerjee, Director (Neurosurgery), Institute of Neuroscience, Medanta, Gurugram]।
আজ কোলকাতায় 'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন : কাটিং-এজ ট্রিটমেন্ট অব নিউরোলজিক্যাল কণ্ডিশনস' (Deep Brain Stimulation : Cutting-edge Treatment of Neurological Conditions) শীর্ষক এক সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন ডাঃ ব্যানার্জি এই দাবী করেন।
সম্প্রতি কোলকাতার ৬০ থেকে ৬৯ বর্ষীয় দুই প্রবীণ ব্যক্তিকে 'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন' (Deep Brain Stimulation) নামাঙ্কিত শল্যচিকিৎসা (Surgery)-র মাধ্যমে পারকিনসন রোগ ও সারভাইক্যাল ডায়স্টোনিয়া থেকে সুস্থ করার পর 'মেদান্তা দ্য মেডিসিটি' (Medanta The Medicity)-র পক্ষ থেকে কোলকাতায় আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে 'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন' পদ্ধতি সম্পর্কে নানান তথ্য পরিবেশন করেন গুরুগ্রাম মেদান্তা-র ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স-এর স্নায়ু শল্যচিকিৎসা বিভাগের নির্দেশক চিকিৎসক অনির্বাণদীপ ব্যানার্জি।
যাঁরা এই শল্যচিকিৎসা সম্পর্কে এখনো সেভাবে ওয়াকিবহাল নন তাঁদের বোঝার সুবিধার্থে অতি সংক্ষেপে 'ডিবিএস' পদ্ধতি সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হলো।
'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন' (Deep Brain Stimulation) কী :-
'ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন' হলো এক ধরণের শল্য চিকিৎসা (Kind of Surgical Operation)।
কখন এই ধরণের শল্য চিকিৎসা প্রয়োজন :-
ওষুধের মাধ্যমে রোগীর কোনোরকম রোগ উপশম না হলে বা রোগীর শরীরে বারংবার ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে পারকিনসন রোগ (Parkinson's Disease), মাংস পেশীর খিঁচুনী এবং অঙ্গ বিকৃতি জনিত ডায়স্টোনিয়া (Dystonia), কম্পন (Essential Tremor), উদ্ভট চিন্তা (Obsessive Compulsive Thoughts) আলঝাইমার (Alzheimer Disease)-এর মতো রোগে এই শল্যচিকিৎসা করা হয়।
'ডিবিএস' কীভাবে করা হয় :-
এম আর আই (MRI) ও সিটি স্ক্যান (City Scan) করার পর সাধারণতঃ কলারবোনের আশেপাশে বা রোগীর শরীরের উপদ্রুত অঞ্চলের চামড়ার অভ্যন্তরে একটা 'নিউরোস্টিমুলেটর' বা 'পালস জেনারেটর' (Neurostimulator/ Pulse Generator) বসানো হয় এবং মাথার খুলি ফুটো করে মগজের ভেতর ইলেকট্রডস (Electrodes) প্রতিস্থাপন করা হয়। শরীরের দুই প্রান্তে এই দুটো জিনিস প্রতিস্থাপন করা হয়ে গেলে, উপদ্রুত অঞ্চলে বসানো যন্ত্র থেকে একটা সঙ্কেত পরিবাহী তার (Extension Wire) মগজের ভেতরে বসানো 'ইলেকট্রডস'-এর সাথে 'লিড'-এর মাধ্যমে যুক্ত করে দেওয়া হয়।
মগজের ভেতর প্রতিষ্ঠিত ইলেকট্রডস থেকে শরীরের নির্দিষ্ট উপদ্রুত অঞ্চলে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল পাঠিয়ে অঙ্গ সঞ্চালন (Movement), যন্ত্রণা (Pain), ভাব (Mood) ও কার্য (Function) নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
মগজের ভেতর প্রতিষ্ঠিত ইলেকট্রডস থেকে শরীরের নির্দিষ্ট উপদ্রুত অঞ্চলে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল পাঠিয়ে অঙ্গ সঞ্চালন (Movement), যন্ত্রণা (Pain), ভাব (Mood) ও কার্য (Function) নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কীভাবে কাজ করে :-
সমস্যা উদ্রেগকারী স্নায়ুর অস্বাভাবিক সঙ্কেতগুলোকে প্রতিহত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কর্তব্য ও দ্রুততার সাথে সমাপন করে রোগীদের রোগের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে সহযোগিতা করে 'ডিবিএস'।
শল্য চিকিৎসার সাফল্যের হার :-
এই শল্যচিকিৎসায় সাফল্যের হার ৯৮ শতাংশ। সংক্রমণ ও অত্যধিক রক্তপাতের কারণে ২ শতাংশ ক্ষেত্রে অসফলতা এসে যায়।
ডিবিএস-এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :-
বেশ কিছু শল্যচিকিৎসার মতো 'ডিবিএস'-এর ক্ষেত্রেও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখে যায়।
কথা বলতে অসুবিধা (Speech Difficulties) এবং উপদ্রুত স্নায়ুতে অস্বাভাবিক ঝনঝন করা, পিন ফোটানো বা সূঁচ ফোটানোর মতো সমস্যা বা
পারেসথেসিয়া (Paresthesia) অনেক সময় প্রকট হয়।
কথা বলতে অসুবিধা (Speech Difficulties) এবং উপদ্রুত স্নায়ুতে অস্বাভাবিক ঝনঝন করা, পিন ফোটানো বা সূঁচ ফোটানোর মতো সমস্যা বা
পারেসথেসিয়া (Paresthesia) অনেক সময় প্রকট হয়।
Comments
Post a Comment