সমস্ত যোগ্য উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবে মোদী সরকার : অমিত শাহ


এম রাজশেখর

নয়াদিল্লি (১৫ মার্চ '২৪):- "সমস্ত যোগ্য উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবে মোদী সরকার। 'সিএএ' নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার আইন নয়," বলেছেন 'ভারতীয় জনতা পার্টি'-র অন্যতম বরিষ্ঠ নেতা তথা দেশের স্বরাষ্ট্র ও সহযোগিতা মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah, MiC, Department of Home Affairs & Co-operation, Government of India)।
গতকাল এক বেসরকারী সংবাদ সংস্থার 'পডকাস্ট'-এর জন্য দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন অমিত শাহ।

তাঁর সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেছেন, "বিগত ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে 'ভারতীয় জনতা পার্টি'-র ইস্তেহারেই 'সিএএ'-র বাস্তবায়নের কথা জানানো হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে একই বছরে লোকসভা ও রাজ্যসভায় 'সিটিজেনশিপ এমেণ্ডমেন্ট অ্যাক্ট' (Citizenship Amendment Act) সংক্ষেপে 'সিএএ' (CAA) অনুমোদন লাভ করেছিল।"
তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "ভারতীয় জনতা পার্টি-র কাছে 'সিএএ' রাজনৈতিক ফায়দা তোলার বিষয় নয় বরং এটা সহানুভূতির বিষয়।"

শাহ বলেছেন, "এই মুহূর্তে রাহুল গান্ধী, ওয়াইসি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা মিথ্যার রাজনীতিতে লিপ্ত। বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতা না করে একদিকে যখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভোটব্যাংকের রাজনীতির জন্য উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে ভুল ধারণা ছড়াচ্ছেন, তেমনই অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটব্যাঙ্কের কারণে দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ছড়ানোর কাজেই ব্যস্ত।
'সিএএ'-র বিরোধিতা না করে এই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আরো বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।"

সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, "রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ফলে সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির সরকার হবে এবং অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

যে সকল রাজ্যগুলো 'সিএএ'-র বিরুদ্ধাচরণ করছে বা রাজ্যে প্রয়োগ করতে দেওয়া হবে না বলে প্রচার করছে তাদের উদ্দেশ্যে শাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন,"নাগরিকত্ব আইন কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, এই বিষয়ে রাজ্যগুলির বিরোধিতার কোনও ভিত্তি নেই।"

'সিএএ'-র বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করতে গিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, "যে সকল ব্যক্তি ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ সালের আগে ভারতের তিন প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী রূপে ভারতে এসেছেন, এই আইন মূলত তাঁদের ন্যায়বিচার, লজ্জা ও কষ্ট থেকে মুক্তি তথা ভারতীয়  নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার বিষয়।
কংগ্রেসী জমানায় শরণার্থীরা প্রথম ভারতে প্রবেশ করলেও, কংগ্রেস সরকার কখনো এই বিষয়ে কিছুই করেনি বরং মোদী-শাহ-র যুগলবন্দিতে সুদীর্ঘ ৭৫ বছরের এক অব্যক্ত দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান হতে চলেছে।"

অমিত শাহ-র বক্তব্যে নজর দিলে বোঝা যাবে তিনি একদিকে যেমন ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দেশের মসনদে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না 'আইএনডিআই' জোট তেমনই বিরোধী শিবিরের হাজারো আস্ফালন হলেও 'সিএএ'-ও আর বাতিল হচ্ছে না।
যেহেতু এই আইন কারো অধিকার হরণের আইন নয় তাই ভারতে বসবাসকারী কোনো মুসলমানদের এই আইন নিয়ে উতলা হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
বিজেপির বিরোধীতা করা বা আরো সুনিশ্চিত ভাবে বললে মোদী-র বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধী রাজনৈতিক শিবির এই আইনের বিরোধিতা করছে। যেমন এর আগেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক, ৩৭০ ধারা বাতিল, তিন তালাক বাতিল ইত্যাদির সময় দেখা গিয়েছিল।



Comments