বিজেপির জন্য ৪০০-র বেশি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন অমিত শাহ


এম রাজশেখর

নয়াদিল্লি (১৩ মার্চ '২৪) :- শুনতে অবাক লাগলেও একথা ষোলোআনা সত্য যে, ২০২৪ সালের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের জন্য ৪০০-র বেশি আসনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন 'ভারতীয় জনতা পার্টি'-র অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্ব তথা ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র ও সহযোগিতায় মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah, MiC, Department of Home Affairs & Co-operation, Government of India)।

গত মঙ্গলবার তেলেঙ্গানায় 'সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ারিয়র্স মিট' (Social Media Warrior's Meet) এবং 'বিজয় সংকল্প সম্মেলন' (Vijay Sankalp Sammelan)-এর সময় অমিত শাহ তাঁর নিজের বক্তব্যে জানিয়েছেন, "অব কী বার ৪০০ পার, এক বার ফির মোদী সরকার।"

অমিত শাহ তাঁর বক্তব্য পরিস্ফুটন করতে গিয়ে জানিয়েছেন, "গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ দেখে গোটা দেশ বিজেপি-কে জয়যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।"

নিজের বক্তব্যে অমিত শাহ তেলেঙ্গানার মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন, "তেলেঙ্গানায় উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে রাজ্যের ১২ টা আসন থেকেই পদ্মের জয় নিশ্চিত করবেন তেলেঙ্গানার জনগণ।"

অমিত শাহ তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন, "তেলেঙ্গানায় 'বি আর এস' এবং 'কংগ্রেস' উভয়েই 'অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন' সংক্ষেপে 'এ আই এম আই এম' দ্বারা প্রভাবিত। তেলেঙ্গানার সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে তেলেঙ্গানার মানুষ মজলিসের প্রভাব কমাতে কংগ্রেসের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছে। যাইহোক তেলেঙ্গানা বিধানসভা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কংগ্রেস মজলিস নেতাকে প্রো-টেম স্পিকার করার জন্য কাজ করে। ভোটব্যাঙ্কের প্রলোভনের কারণে 'কংগ্রেস' এবং 'বিআরএস' উভয়ই হায়দ্রাবাদের মুক্তি দিবস যেমন উদযাপন করে না তেমনই সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকেও সম্মান করে না। দেশের বাকি অংশের সাথে তেলেঙ্গানার মানুষ দেখেছে যে 'বিআরএস', 'কংগ্রেস' এবং 'এআইএমআইএম'-এর লক্ষ্য তাদের নিজেদের পরিবারকে ক্ষমতায়ন করা। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় কংগ্রেসের শীর্ষ পদে যেমন পরিবারতন্ত্রের ছায়া (জওহরলাল নেহরুর পরে ইন্দিরা গান্ধী, তারপর রাজীব গান্ধী, তারপর সোনিয়া গান্ধী এবং এখন রাহুল গান্ধী) একই ভাবে 'কেসিআর'-এর পরে 'কেটিআর' এবং ওয়াইসি-র 'এআইএমআইএম' দলও বংশবাদী দল।
এই সব দলের লক্ষ্য তাদের নিজের ছেলে মেয়ের মঙ্গল নিশ্চিত করা। যে দলগুলি শুধুমাত্র নিজেদের পরিবারের মঙ্গল নিয়ে চিন্তা করে তারা তেলঙ্গানা বা দেশের যুবক, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী, মহিলা, কৃষক এবং দলিতদের জন্য ভাল করতে পারে না।

স্বাধীনতার পর, কয়েক দশক ধরে, কংগ্রেস ওয়াইসি ভোট ব্যাঙ্কের ভয়ে তিন তালাককে সরিয়ে দেয়নি, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন তালাক সরিয়ে মুসলিম মহিলাদের সম্মানের জন্য কাজ করেছেন।
কংগ্রেস ৪ প্রজন্ম ধরে দারিদ্র্য দূর করার স্লোগান দিয়ে চললেও মোদী সরকারের আমলে গরীবদের উন্নতি হল।
৩৭০ ধারা অপসারণ হোক, রাম মন্দির নির্মাণ হোক বা দেশব্যাপী সিএএ কার্যকর করা হোক - গত ১০ বছরে, মোদি সরকার প্রতিটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে।"

এই বছর লোকসভা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী প্রচারও ততই জোরদার হচ্ছে ৷
'ভারতীয় জনতা পার্টি'-র অন্যতম চালিকা শক্তি তথা নির্বাচনী কাণ্ডারী অমিত শাহও দলীয় প্রচারাভিযানকে তুঙ্গে রাখতে সামাজিক মাধ্যমের প্রচার সহযোগীদের সহায়তা প্রার্থনা করে আশা রেখেছেন, "যে সকল রাজ্যে একসময় মতদানের নিরিখে একসময় বিজেপি সবার শেষে থাকত, এবার সেইসব স্থানেও বিজেপি-র উত্থান হবে।"

অমিত শাহ-র যোশবর্ধক বক্তব্য শুনে তেলেঙ্গানার অনেক সামাজিক মাধ্যমের প্রচারক বা প্রচার যুদ্ধের সৈনিকরাই জানিয়েছেন, "ভারতীয় রাজনীতিতে যেমন 'মোদী ম্যাজিক' আছে, তেমনই যেকোনো নির্বাচনে অমিত শাহের নামই ভোট জোগাড়ের জন্য যথেষ্ট।"  

Comments