অনুমতি বিহীন পানীয় জলের অসাধু কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানাল 'ডব্লিউ বি পি ডি ডব্লিউ এম ডব্লিউ এ'


হীরক মুখোপাধ্যায়

কোলকাতা (২১ অগস্ট '২৩):- অনুমতি বিহীন পানীয় জলের অসাধু কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানাল 'ডব্লিউ বি পি ডি ডব্লিউ এম ডব্লিউ এ'।

সরকারের থেকে কোনোরকম অনুমতি না নিয়ে (Without license), জনস্বাস্থ্যর মতো সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় (Public Health Issue)-কে অবজ্ঞা করে; কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর দ্বারা রাজ্যের সর্বত্র সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে পানীয় জলের ব্যবসা (Illicit Trade of Packaged Drinking Water) পরিচালনার বিরুদ্ধে সর্বজনীন ভাবে আজ নিজেদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করল 'ওয়েস্ট বেঙ্গল প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফ্যাকচারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন' (West Bengal Packaged Drinking Water Manufacturer's Welfare Association)।

বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে চলন্ত ট্রেন, বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন স্থানে রোজ প্লাস্টিকের বোতলে যত পানীয় জল বিক্রি হতে দেখা যায় তার একটা বড়ো অংশই অসাধু উপায়ে নির্মিত।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে অসাধু কারবারীদের একটা শ্রেণী যেমন দীর্ঘদিন ধরে নামকরা সংস্থার বোতল ও মোড়ক নকল করে ব্যবসা করে চলেছেন তেমনই আর এক অংশ সরাসরি কল থেকে জল নিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়া না করেই প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার বলে বাজারে বিক্রি করে চলেছে।
আর সম্ভবতঃ এই কারণেই বাজারে প্রচলিত নামী কোম্পানীর জলের স্বাদ অনেক সময় একেক জায়গায় এক এক রকম মনে হয়। কোথাও মনে হয় একদম কচি ডাবের জলের মতো তো কখনো মনে হয় শুধুমাত্র ফটকিরি দেওয়া জলের মতো।

'ডব্লিউ বি পি ডি ডব্লিউ এম ডব্লিউ এ'-র তরফ থেকে সহ সভাপতি সুদীপ ঘোষ (Sudip Ghosh, Vice President, WBPDWMWA) জানিয়েছেন, "এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ৩৫০ থেকে ৪০০ টা সরকারী অনুমোদিত প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার নির্মাণ সংস্থা রয়েছে সেখানে ১৫ হাজারের বেশি অবৈধ সংস্থা অবাধে পানীয় জল বিক্রি করে চলেছে।
সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয় এই মুহূর্তে সমগ্র রাজ্যে লেবেল বিহীন অবস্থায় ২০ লিটারের অবৈধ পানীয় জল অঢেল ভাবে বিক্রি হচ্ছে। "

'প্রেস ক্লাব কোলকাতা'-য় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আজ খোলাখুলি নিজেদের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন সংস্থার পরিচালন সমিতির কর্ণধারবৃন্দ।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সংস্থার সভাপতি সঞ্জীব নাগ (Sanjib Nag, President, WBPDWMWA) বলেছেন, "ব্যবসায়ীদের অবৈধ কাজের জন্য আজ জনস্বাস্থ্যের মতো সংবেদনশীল বিষয়ের উপর যেমন অঘটনের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছে তেমনই বৈধ ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, শুধু তাই নয় একশ্রেণীর অবৈধ কারবারীদের জন্য সরকারও প্রতি বছরই ব্যাপক হারে রাজস্ব হারাচ্ছে।"

'ডব্লিউ বি পি ডি ডব্লিউ এম ডব্লিউ এ'-র তরফ থেকে সম্পাদক নবীন জয়রামকা (Navin Jairamka, Secretary, WBPDWMWA) আজ স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, "নির্দিষ্ট পদ্ধতি না মেনে স্বাস্থ্যের পরিপন্থী রাসায়নিকের সহায়তা নিয়ে একশ্রেণীর কারবারী যত্রতত্র জলের ব্যবসা শুরু করছেন। সরকার যদি এখনই অবৈধ কারবারীদের উপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে অচিরেই জনগণের স্বাস্থ্য সঙ্কটে পড়তে পারে।"

সংস্থার সভাপতি ও সম্পাদক যখন জনস্বাস্থ্য ও সরকারের রাজস্বহানী-র মতো ঘটনার দিকে দৃষ্টিপাত করতে চেয়েছেন ঠিক তখন সংস্থার অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র সুরানা (Jitendra Surana, Chairman, WBPDWMWA) ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, "যে সকল ব্যবসায়ী সমস্ত সরকারী আইন, পদ্ধতি মেনে নির্দিষ্ট মাত্রায় কর দিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করছেন, সরকার যদি তাঁদের পক্ষ না নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবৈধ কারবারীদের সহায়তা করে চলেন তার থেকে নিন্দনীয় ঘটনা কিছুই হতে পারে না। অবিলম্বে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।"

Comments