অস্তিত্ব সংকটের মুখে উত্তরবঙ্গের কমলালেবু


হীরক মুখোপাধ্যায় 

কোলকাতা (৮ ডিসেম্বর '২২):- গত ১০ বছর ধরে অস্তিত্ব সংকটের মুখে উত্তরবঙ্গের অন্যতম অর্থকরী বাগিচা ফসল কমলালেবু (Oranges)।
উদ্ভিদের রোগ, পোকা ও সংক্রমণের ফলে একদিকে যেমন গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই শুকিয়ে যাচ্ছে গাছের নতুন শাখা, ঝড়ে যাচ্ছে ফুল ও ফল। আর এসবের সাঁড়াশি আক্রমণে নাজেহাল উত্তরবঙ্গের কমলালেবু উৎপাদকগণ।
ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি মন্ত্রকের অধীন বাগিচা ফসল বিভাগ (Department of Horticulture)-এর আধিকারিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, "উত্তরবঙ্গের কমলালেবু গাছের সমস্যা চিরতরে দূর করতে গেলে অবিলম্বে সমস্ত গাছ বিনষ্ট করে মাটি উপর নীচ করে কীটনাশক দিয়ে কিছু সময় ফেলে রাখার পর নতুন করে কমলালেবুর চারা লাগালে এই সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান হতে পারে, নচেৎ এই মুহুর্তে কোনো বিকল্প সমাধান নেই।" এমনটাই জানিয়েছেন 'পঞ্চম হিমালয়ান অরেঞ্জ টুরিসম ফেস্টিভ্যাল'-এর দুই জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটর গীতালি লাহিড়ি ও মহাশ্বেতা রায় (Gitali Lahiri & Mahasweta Roy Joint Co-ordinator, 5th Himalayan Orange Tourism Festival)।

সরকারী আধিকারিকদের এই কথা শুনে মনে প্রাণে মুষড়ে রয়েছেন হিমালয়ের তরাই অঞ্চলের গ্রামীণ অধিবাসীবৃন্দ।
ফলনশীল গাছ নষ্ট করে কিছু সময় বাদে নতুন চারা লাগিয়ে সেই গাছগুলো থেকে ফলন পেতে পেতে লেগে যাবে বেশ কিছুটা সময়, এই সময় উত্তরবঙ্গের কমলালেবু ও কমলালেবু সম্পর্কিত শিল্পের সাথে জড়িত গ্রামীণ জনগণের রুটিরুজি-র জোগাড় হবে কীভাবে সেটাই তাঁদের এখন সব থেকে বড়ো চিন্তা।

গতকাল অপরাহ্নে 'কোলকাতা প্রেস ক্লাব'-এ আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এমনই তথ্য পরিবেশন করেছেন উৎসব কমিটির দুই প্রতিনিধি।


আর এই ঘোর দুঃসময়ে 'অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যাণ্ড টুরিসম' (Association for Conservation & Tourism)-এর উদ্যোগে আগামী ৯ ডিসেম্বর কোলকাতার সিটি সেন্টার ১ (City Centre 1, Kolkata)-এ শুরু হতে চলেছে পঞ্চম হিমালয়ান অরেঞ্জ টুরিসম ফেস্টিভ্যাল এবং পঞ্চম এবিটিও ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন [5th Himalayan Orange Tourism Festival & 5th ABTO (Association of Buddhist Tour Operators) International Convention]।
আয়োজক সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, "ত্রিদবসীয় এই মেলা শেষ হবে ১১ ডিসেম্বর। মেলা চলাকালীন প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সবাই মেলায় বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।" 

মেলা কমিটির তরফ থেকে লিখিত প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'এই মেলা এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম হিমালয়ান রুরাল টুরিসম ফেস্টিভ্যাল। এই মেলায় ৮৫ জন বেঙ্গল হিমালয়ান অঞ্চল থেকে, ১২ জন সিকিম থেকে, ৮১ জন নেপালের পূর্বাঞ্চল থেকে, ১৩ জন অরুণাচল প্রদেশ থেকে এবং ৬ জন পূর্ব ও উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের পসরা নিয়ে মেলায় হাজির থাকবেন।'

'পঞ্চম হিমালয়ান অরেঞ্জ টুরিসম ফেস্টিভ্যাল'-এর পাশাপাশি একই স্থানে চলবে 'পঞ্চম এবিটিও ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন'। আয়োজক সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, "উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ অঞ্চলের আর্থসামাজিক বিকাশের লক্ষ্যে উত্তরবঙ্গের গ্রামগুলোতে বেশি করে বিদেশী পর্যটক নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়েছে 'এবিটিও'।" 

Comments