আত্ম উপলব্ধির ক্ষেত্রে নীরব বৈঠকের জুড়ি মেলা ভার : হরিৎ রত্ন


হীরক মুখোপাধ্যায় 

কোলকাতা (২৭ ডিসেম্বর '২২):- বহমান বছরের যন্ত্রণা, দুর্দশাকে চিরতরে দূরে সরিয়ে রেখে ইতিবাচকতার সাথে জীবনে এগিয়ে চলার এক প্রাচীন পথের সন্ধান দিলেন আধ্যাত্ম জগতের অন্যতম শিক্ষাবিদ হরিৎ রত্ন (Harit Ratna)।

কোলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে অবস্থিত নিজের কার্যালয়ে আজ এক পত্রকার সমারোহের আয়োজন করে হরিৎ রত্ন জানান, "ব্যক্তিগত সমস্যা বা দুর্ভোগ লগ্নে অধিকাংশ সময় বহির্বিশ্ব বা আধ্যাত্মিক জগতের সহায়তা না পেয়ে অধিকাংশ ব্যক্তি অসহায় বোধ করেন।
অথচ ব্যক্তিজীবনে সামান্য কিছু প্রয়াস করলেই আমজনতা এই 'অসহায়তা' থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন।"

হরিৎ রত্ন এই অকিঞ্চন প্রয়াসের নামকরণ করেছেন 'নীরব বৈঠক' (Silent Sitting)। তাঁর মতে, "বাস্তব অর্থে আত্ম উপলব্ধির ক্ষেত্রে 'নীরব বৈঠক'-এর জুড়ি মেলা ভার।"

হরিৎ রত্ন-র বক্তব্য অনুযায়ী, "বহির্বিশ্বে ইষ্টকে খোঁজার চেষ্টা বন্ধ করে নিজের ভেতরে তাঁকে খোঁজার চেষ্টা করলে যে অপরিমেয় শক্তি লাভ হয় তা যেকোনো ব্যক্তিকেই আত্মিক রূপে শক্তিমান বানাতে সক্ষম।"

হরিৎ রত্ন-র প্রবচন অনুযায়ী, "নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। একই অভিজ্ঞতার জন্য একত্ব (Oneness)-র অংশ হোন। মানসিক সদিচ্ছার সাথে বুঝুন 'কীভাবে আপনার জীবন যাপন করা প্রয়োজন'।"

হরিৎ রত্ন-র বক্তব্য মালার সার কথা- প্রাথমিক অবস্থায় প্রত্যেকেরই মৌনতার সহায়তায় আত্ম দর্শন বা আত্ম উপলব্ধির প্রয়াস নেওয়া বাঞ্ছনীয়। শুধুমাত্র আত্ম অন্বেষণই পারে ভূমার সাথে নিজেকে মিলিয়ে দিতে। নতুবা সারা জীবন 'অন্তর আমি' (Inner me) ও 'বহির আমি' (External/Physical me)-র দ্বন্দ্বে সারা জীবন জ্বলে পুড়ে মরতে হবে।

নীরব বৈঠক-এর অনুশীলন পদ্ধতি :

হরিৎ রত্ন বর্ণিত 'নীরব বৈঠক' মূলত ধ্যান মার্গে প্রবেশের এক প্রারাম্ভিক অনুশীলন মাত্র।
হরিৎ রত্ন-র বক্তব্য অনুযায়ী, 'নীরব বৈঠক' চর্চা বা অনুশীলন করতে গেলে যে কোনো স্থানে পা ভাঁজ করে প্রথমে একটা আরামদায়ক অবস্থানে বসতে হবে।

এরপর চোখ বন্ধ করতে হবে।
এই অবস্থায় মানস জগতে যে চিন্তা ভাবনাই আসুক না কেন তার উপর কোনো প্রতিবন্ধকতা বা নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টা করার দরকার নেই। এই চিন্তাগুলো সহজভাবেই মনোজগতে বিচরণ করুক।

এভাবে কিছু সময় কাটানোর পর একটা সময়ে ব্যক্তির মনোজগত চিন্তা, ভয়, ক্রোধ, দ্বেষ মুক্ত হয়ে যাবে, এবং ব্যক্তি মহাবিশ্বের সাথে সংযুক্ততার এক গভীর ধনাত্মক অনুভূতি অনুভব করবেন।
এটা একত্বের অবস্থা। অতিচেতনা এবং সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক সারিবদ্ধতার অবস্থা। ব্যক্তির অন্তর্নিহিত পুরুষ/শক্তি-র সঙ্গে এ এক অনাস্বাদিত পূর্ব সাক্ষাৎ।
এই অবস্থায় ব্যক্তি কখনো একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পারেন যা জ্ঞান এবং দিকনির্দেশনা ভাগ করে। কখনো বা একটা ছবি দেখতে পারেন যা ব্যক্তিকে অকাট্য সত্য বুঝতে বা চিনতে সহায়তা করে।
অভিজ্ঞতার ধরন নির্বিশেষে ব্যক্তি অপরিমেয় প্রশান্তি, ভালবাসা এবং সুখ অনুভব করবেন।

অনুশীলন শুরুর সময় পাঁচ মিনিট যথেষ্ট হলেও ধীরে ধীরে এর মাত্রা বাড়িয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে পনেরো মিনিট করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।








Comments