মধুমেহ থেকে সুরক্ষার উপায় সম্পর্কে বারাসাত নারায়ণার সচেতনতা শিবির

এম রাজশেখর 

বারাসাত (১৯ নভেম্বর '২২):- বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব যে কটা ঘাতক রোগ নিয়ে সব থেকে বেশি চিন্তান্বিত তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হল ডায়াবেটিস মেলিটাস (Diabetes Mellitus) বা মধুমেহ।
মানব শরীরের নীরব ঘাতক এই রোগ কখন যে চুপিচুপি শরীরে বাসা বেঁধে নিজের গুণে শরীরের বেশ কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপর ঘাতক প্রভাব বিস্তার করে তা বেশিরভাগ সময় বোঝাই যায় না। আর যখন শরীরে 'মধুমেহ' হয় তখন জীবনটাই আক্ষরিক অর্থে মধুহীন হয়ে যায়।

'ইনসুলিন'-এর আবিষ্কর্তা (Inventor of Insulin) ফ্রেডরিক ব্যান্টিং (Frederick Banting)-এর জন্মদিন ১৪ নভেম্বরকে সমস্ত বিশ্বে 'বিশ্ব মধুমেহ দিবস' (World Diabetes Day) রূপে পালন করা হয়।

'বিশ্ব মধুমেহ দিবস' উপলক্ষ্যে গত ১৪ নভেম্বর 'নারায়াণা মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল, বারাসাত' (Narayana Multispeciality Hospital, Barasat) আয়োজন করেছিল 'ডায়াবেটিস'-এর উপর সচেতনতামূলক এক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে হাসপাতালের কন্সালটেন্ট জেনারেল মেডিসিন ও ডায়াবেটোলজিস্ট ডাঃ বিকাশ মাসকারা (Dr. Bikash Maskara, Consultant General Medicine & Diabetologist) এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ সঞ্চিতা কর (Dietitian, Sanchita Kar) জনগণকে মধুমেহ রোগ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রাঞ্জলভাবে বুঝিয়েছেন এই রোগের উপসর্গ, প্রভাব, প্রকোপ, চিকিৎসা এবং খাদ্যাভ্যাস পদ্ধতি।

সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠানে ডাঃ মাসকারা বলেন, "প্রতি ২ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মধ্যে ১ জনের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে না যেটা মারাত্মক।"
সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠানে ডাঃ মাসকারা কারা ডায়াবেটিক, কারা প্রি- ডায়াবেটিক, কারা ডায়াবেটিক নয় তাদের জীবনযাত্রার উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।

ডাঃ মাসকারা বলেন, "স্থূলতা (Obesity), উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure), রক্তে উচ্চ মাত্রায় চর্বি (High Cholesterol), এবং অলসতা (Idleness) ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ। অনিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস বিশেষত ব্রেকফাস্ট ও সচেতনতার অভাব ডায়াবেটিস হওয়াকে ত্বরান্বিত করে। যদি সময় মতো ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে চোখের সমস্যা, নার্ভের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।"

তবে জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি এও বলেন, "সঠিক খাদ্যাভাস ও ব্যায়াম ডায়াবেটিস প্রতিরোধের চাবিকাঠি। এই রোগের জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা দরকার। ঘা, সংক্রমণ বা আঘাত কালীন সময়ে নিয়মিতভাবে পায়ের যত্ন নেওয়া দরকার।

ডাঃ বিকাশ মাসকারা-কে উপযুক্ত ভাবে সঙ্গত করে পুষ্টি বিশেষজ্ঞ সঞ্চিতা কর জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, "মধুমেহ হলেই যে মিষ্টি খাওয়া যাবে না তা নয়, রোগের প্রকোপ অনুযায়ী চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো স্বল্প পরিমাণে আলু, মিষ্টি মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, যে পরিমাণ মিষ্টি বা অন্য সামগ্রী খাওয়া হচ্ছে সেই পরিমাণ ক্যালরি কায়িক পরিশ্রম করে অবিলম্বে নষ্ট করতে হবে, অন্যথায় সমস্যা বেড়ে যাবে।"

Comments