সময় মতো সুচিকিৎসা হলে দ্রুত সেরে যায় অ্যামব্লিওপিয়া : ডাঃ ইপ্সিতা বসু


হীরক মুখোপাধ্যায় 

কোলকাতা (২০ অগস্ট '২২):- বর্তমানে 'অ্যামব্লিওপিয়া' (Amblyopia) বা 'লেজি আই' (Lazy Eye)-কে নিয়ে চারদিকে চর্চা হচ্ছে। কিন্তু সত্যি কী এই রোগ তেমন ভয়াবহ !


এই বিষয়ে 'দিশা আই হসপিটালস'-এর অন্যতম চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ (Consultant - Paediatric Opthamology) ইপ্সিতা বসু (Dr. Ipsita Basu) জানিয়েছেন, "অনেকের ধারণা 'অ্যামব্লিওপিয়া' (Amblyopia) বা 'লেজি আই' (Lazy Eye) হলে তা মোটেও সারে না, কিন্তু এই কথা পুরোটাই ঠিক নয়, একদম শিশু বয়সে যদি কোনো অভিভাবক তাঁদের সমস্যাগ্রস্থ শিশুকে নিয়ে দ্রুত চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগ সেরে যায়।"

আসুন অতি সংক্ষেপে একটা সুস্পষ্ট ধারণা করে নেওয়া যাক 'লেজি আই' রোগ সম্পর্কে।

লেজি আই কাকে বলে :

লেজি কথাটার বাংলা মানে অলস। যখন আমাদের দুটো চোখের মধ্যে কোনো একটা চোখ তার কাজে একটু শৈথিল্য দেখায় বা দেখানো শুরু করে তখন অপর চোখের সাপেক্ষে সেই চোখটাকে অলস চোখ বা 'লেজি আই' বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

শৈথিল্যের ধরণ :

আমাদের দুটো চোখই তার সামনের দৃশ্য দেখে সেই দৃশ্য কখনো স্থির চিত্র বা ধারা চিত্র রূপে মগজে প্রেরণ করে। মগজ তখন এই ছবিগুলোকে চিহ্নিত করে ব্যক্তিকে ওই দৃশ্য সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়।
কিন্তু যদি কার্যকারণ বশতঃ মানুষের কোনো চোখ অপর চোখের সাপেক্ষে অস্পষ্ট দৃশ্য ক্রমাগত রূপে মগজে পাঠাতে শুরু করে, তখন মগজ অসুস্থ চোখের পাঠানো অস্পষ্ট ছবি বা দৃশ্যের বদলে সুস্থ চোখের পাঠানো সুস্পষ্ট ছবিকে গুরুত্ব দিয়ে সেই ছবি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। এইভাবে কিছুদিন চলার পর স্বাভাবিক ভাবেই একটা চোখ অপর চোখের সাপেক্ষে অলস বলে গণ্য হয়। 

এটা কী জাতীয় সমস্যা :

এটা চোখের মনির কোনো সমস্যা নয় এটা দৃশ্য অবলোকন করার পর প্রক্রিয়াকরণের এক সমস্যা বিশেষ।


এই সমস্যা কেনো হয় :

বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে। তবে শিশু বয়সে প্রধানত দৃশ্যের উপর চোখের ঠিকমতো লক্ষ্য না পড়া একটা মূল সমস্যা। অনেক সময় শারীরিক কারণে কোন শিশুর কোনো একটা চোখের মনি দৃশ্যকে ঠিকঠাক ধারণ করতে পারে না, ফলত শিশুটা তার সেই চোখ দিয়ে যে দৃশ্য দেখে তা পুরোটাই অস্বচ্ছ , কিছু ক্ষেত্রে ঠিকঠাক পাওয়ার (Proper Power)-এর চশমা পরলে হয়তো সাময়িকভাবে শিশুটা দেখতে পায় কিন্তু চশমা খুললেই সেই চোখটা কার্যত অক্ষম হয়ে পড়ে। ক্ষেত্রবিশেষে ঠিকঠাক চশমা পরলেও অনেক সময় শিশুটা দেখতে পায় না।

সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় :

সমস্যা বুঝতে পারলেই যেকোনো চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে যাওয়া উচিত। তিনিই এই সমস্যা থেকে রোগীকে মুক্তি দিতে পারবেন।

চিকিৎসা পদ্ধতি :

কিছু ক্ষেত্রে চশমার পাওয়ারের বদল ঘটিয়ে এই রোগ যেমন সারানো যায় ঠিক তেমনি অন্য উপাচারের মাধ্যমেও রোগীকে সুস্থ করা যায়।

চোখ মানুষের এক অমূল্য সম্পদ, তাই চোখের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কোনো সমস্যা দেখা দিলেই অপ্রয়োজনীয় কালবিলম্ব বা লজ্জা না করে অবিলম্বে সুচিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়াটা সবার ক্ষেত্রেই একান্ত আবশ্যক।

Comments