কোলকাতার ৪৯ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি পরিবারের আয়ের উপর নির্ভরশীল

 
কোলকাতার ৪৯ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি পরিবারের আয়ের উপর নির্ভরশীল



হীরক মুখোপাধ্যায়

কোলকাতা (১৬ জুন '২২):- 'বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস' উপলক্ষ্যে 'হেল্প এজ ইণ্ডিয়া' নামক এক বেসরকারি সমাজসেবী সংগঠন গতকাল সন্ধ্যায় কোলকাতায় 'ব্রিজ দ্য গ্যাপ : আণ্ডারস্ট্যান্ডিং এল্ডার নিডস' শীর্ষক যে জাতীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে কোলকাতার ৪৯ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি আয়ের উৎসের জন্য তাদের পরিবারের উপর সরাসরি নির্ভরশীল, যেখানে সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে ৪৭ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি আয়ের উৎসের জন্য তাদের পরিবারের উপর সরাসরি নির্ভর করতে বাধ্য থাকেন।

জাতীয় প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এলো :-

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু বিকাশ, সমাজ কল্যাণ, স্ব সহায়তা গোষ্ঠী এবং স্বশক্তিকরণ বিভাগের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা এবং বিভাগীয় সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা আয়োগ-এর অধ্যক্ষা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সহ একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে 'হেল্প এজ ইণ্ডিয়া' যে জাতীয়  প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে-
👉🏻 দেশের ৪৭ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি আয়ের উৎসের জন্য পরিবারের উপর সরাসরি নির্ভরশীল।
অথচ কোলকাতার ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান খাটছে না। পশ্চিমবঙ্গে 'মা মাটি মানুষ-এর সরকার' চলাকালীন কোলকাতার ৪৯ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি আয়ের উৎসের জন্য পরিবারের উপর সরাসরি নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন।

👉🏻 সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে যেখানে ৩৪ শতাংশ প্রবীণ তাদের আয়ের জন্য পেনশন ও অন্যান্য নগদ স্থানান্তরের উপর নির্ভরশীল, সেখানে কোলকাতায় মাত্র ১৮ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি আয়ের উৎসের জন্য পেনশন বা অন্যান্য নগদ স্থানান্তরের উপর নির্ভরশীল।

👉🏻 কোরোনা অতিমারীর পরবর্তী সময়ে যখন সমগ্র বিশ্বের মানুষের অর্থনৈতিক কাঠামো প্রায় ভেঙে পড়েছে, চারদিকে শুধু কান্না আর হাহাকার।
যে সময় ভারতের ৫২ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন তাঁদের আয় পর্যাপ্ত নয়, ৪০ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি যেখানে জানিয়েছেন আর্থিক দিক দিয়ে তাঁরা নিরাপদে নেই।
ঠিক সেই সময়ে কোনো এক অদৃশ্য জাদুবলে কোলকাতার ৭৭ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন তাঁদের আয় পর্যাপ্ত বা যথেষ্ট।
৩২ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তা রয়েছে যদিও মাত্র ২৩ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন তাঁদের আয় পর্যাপ্ত নয়।

যে তথ্য দেশবাসীকে বিস্মিত করছে :-

'হেল্প এজ ইণ্ডিয়া'-র জাতীয় প্রতিবেদন থেকে উঠে আসা তথ্যগুলোর দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু সূচকের আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
সব থেকে যে বিষয় নিয়ে তথ্যাভিজ্ঞ মহল চর্চা শুরু করেছে তা হল :-
পশ্চিমবঙ্গে 'বার্ধক্য ভাতা' বা 'বিধবা ভাতা' নামক সরকারী সহায়তা মূলক প্রকল্প শুরু হওয়ার পরেই কী কোলকাতার ৭৭ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি নিজেদের আয়কে যথেষ্ট বলে মনে করছেন ?
তাই যদি হয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গের প্রবীণদের স্বস্তি সূচক কী মাত্র ১ হাজার টাকা !

কিছু প্রশ্ন:-

যদি পশ্চিমবঙ্গের ৭৭ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তির আয় যথেষ্ট হয়ে থাকে তাহলে কোলকাতার রাজপথে ভিখারীর সংখ্যা এত বাড়ে কীভাবে ?

সংবাদপত্র বা টিভি খুললেই কেনো দেখতে হচ্ছে বয়স্ক পিতামাতাকে খেতে দিচ্ছে না সন্তান !
বা এই জাতীয় হাজারো ঋণাত্মক খবরের কোলাজ।

Comments